কাজিপুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফার্নিচার তৈরীর কারিগরেরা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে ফার্নিচার মেলাকে সামনে রেখে এই ব্যস্ততা কারিগরদের। প্রতিবছর পুজা উপলক্ষে কাজিপুরে বসে ফার্নিচারের মেলা। এই মেলাকে ঘিরে কাজিপুরের ফার্নিচার গ্রাম হিসেবে পরিচিত ছালাভরা, কুনকুনিয়া, সাতকয়া, শিমুলদাইড়, শ্যামপুর, গাড়াবেড় এলাকায় দিনরাত এলাকায় তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের কাঠের আসবাবপত্র। প্রতিবছর শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে উপজেলার সোনামুখীতে এই মেলা বসে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে মেলায় কাঠের ফার্নিচার আসে। আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ তাদের বছরের প্রয়োজনীয় কাঠের আসবাবপত্র এই মেলা থেকে সংগ্রহ করেন। কয়েক কোটি টাকার ফার্নিচার সোনামুখীর এই মেলায় বিক্রি হয়।
শিমুলদাইড় বাজার ও ছালাভরা বাজারের ফার্নিচারের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, শ্রমিকেরা কেউ নকশা কাটছেন, কেউ পালিশ করছেন, কেউবা কাঠে পেরেক দিয়ে জোড়া লাগিয়ে বাক্স, খাট, আলমিরা, ড্রেসিং টেবিল, সোফাসেট, মিটসেফসহ নানা আসবাবপত্র তৈরি করছেন। এছাড়া, টেবিল, পিড়া, বেলুন র্যাকের মতো ছোট ছোট আসবাবপত্রও কোন কোন কারখানাতে তৈরি করছেন শ্রমিকেরা। কারখানার মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সারাবছরেই তারা কাঠের নানা জিনিসপত্র তৈরি করে দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও জেলায় পাইকারিভাবে বিক্রি করেন। তবে মেলার আগের দুইমাস তারা পাইকারি বিক্রি বন্ধ করে দেন। শুধু মেলার জন্যে নানা ডিজাইনের ফার্নিচার তৈরি করে তাদের গুদামে ভরে রাখেন। মেলার জায়গা বরাদ্দ নিয়ে এসব জিনিসপত্র পরিবহনে করে সেখানে নিয়ে যান তারা। শিমুলদাইড় বাজারের মেসার্স মান্নান ফার্নিচারের মালিক আব্দুল মান্নান জানান, সারা বছর আমার কারখানায় গড়ে চারজন করে শ্রমিক কাজ করলেও মেলার দুমাস আগে থেকে দৈনিক আট থেকে দশজন করে শ্রমিক কাজ করছেন। বিদ্যুৎ সৃুবিধা কাজে লাগিয়ে বেশ খানিকটা রাত পর্যন্ত চলে ফার্নিচার তৈরির কাজ। ছালাভরা বাজারের মেসার্স সৌখিন কাঠঘরের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, মেলা উপলক্ষে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচজন করে শ্রমিক বেশি কাজ করছে। তবে এখানে দুই প্রকারের শ্রমিক রয়েছে। কেউ জিনিসের উপর মূল্য নেন। আবার কেউ মাসিক বেতনে কাজ করেন। ফার্নিচার ব্যবসায়ী সুজন মিয়া জানান, মেলা উপলক্ষে কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র বানিয়ে রেখেছেন। নকশা কাটার শ্রমিক রহিচ মিয়া জানান, এই মেলা উপলক্ষে দুইমাস আগে থেকে কারখানায় নকশার কাজ করছি। প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকার মতো মজুরি পাই।